মগবাজারে জামায়াতের ইফতার মাহফিল
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রিয় মজলিসে শুরা সদস্য ও রমনা থানা আমীর ড.মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, মাহে রমজান শান্তির বারতা নিয়ে আসলেও দেশে রমজান মাসেও আজ অ-শান্তি বিরাজ করছে। সরকারের জুলুম-নির্যাতন, দমন-নিপীড়ন আর গণ-গ্রেফতারের কারণে দেশের জনগন নির্বিঘ্নে সাওম পালন করতে পারছে না।
আজ (বুধবার) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রমনা থানার উদ্যেগে আয়োজিত ইফতার মাহফিল ও রমজানের তাৎপর্য শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। থানা নায়েবে আমীর ড.আহসান হাবীবের পরিচালনায় এতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য ও শিবিরের সাবেক কেন্দীয় সভাপতি মো: আব্দুল জব্বার, জামায়াত নেতা মোশারফ হোসেন প্রমূখ।
ড.করিম বলেন, বিরোধী দলের লক্ষ-লক্ষ নেত-কর্মীরা আজ ঘর-বাড়ী ছাড়া। অনেকে সেহরী-তারাবী নামাজ এমনকি ইফতার পর্যন্ত করতে পারছেনা। জনগনের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। সরকার নাস্তিকতাকে উস্কে দিচ্ছে, ফলে প্রতিনিয়ত সকল ধর্মের লোক প্রাণ হারাচ্ছে। আইন-শৃংখলার অবনতি, দ্রব্য-মুল্যের উর্ধ্বগতি, গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি ও মানবাধিকারের চরম অবনতিতে দেশের জনগণ দিশেহারা। সেক্যুলার শিক্ষানীতির নামে তরুণ প্রজন্মকে মেধাহীন ও ধর্মবিমূখ বানানোর গভীর চক্রান্ত করছে সরকার। ৯০ ভাগ মানুষের দেশে মসজিদ নির্মাণে বাঁধা দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের দূর্নীতি ও লুট-পাটের কারণে অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙ্গে পড়েছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ হুমকীর সম্মুখীন। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে দেশের জনগনের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, পৃথিবীর সব নীতি-নৈতিকতা, শিষ্ঠাচার, ন্যায়বিচারকে উপেক্ষা করে আওয়ামীলীগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করেছে। যারা সারা জীবন মানুষকে আল্লাহর দ্বীনের দিকে আহবান করেছেন, স্বপ্ন দেখেছেন একটি সুখি সমৃদ্ধশালী, কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। তাঁদের সততা, দক্ষতা, দেশপ্রেমের ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। তাঁরা ছিলেন দূর্নীতিমুক্ত ও ইনাসফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের সংগ্রামে অগ্রসেনানী। শুধুমাত্র ইসলামী আন্দোলন করার অপরাধে তাঁদেরকে হত্যা করা হয়েছে। এদেশের তরুণ প্রজন্ম শহীদদেরকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করবে।
তিনি আরো বলেন, আল্লাহ তায়ালা মানব জাতির হেদায়াতের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ আল কোরআন আমাদের প্রিয়নবী মুহাম্মদ (সা.)- এর ওপর এই রমজান মাসেই অবতীর্ণ করেছেন। আর মানুষকে দিয়েছেন খেলাফতের দায়িত্ব। মহাগ্রন্থ কোরআনের আইন বাস্তবায়নের একজন সৈনিক হিসেবে আল্লাহ তায়ালা ব্যক্তিকে প্রশিক্ষিত করার জন্য রোজা ফরজ করেছেন। সঙ্গে-সঙ্গে সত্য এবং মিথ্যার যে চিরন্তন দ্বন্দ্ব তথা কোরআন যে ফোরকান, এর প্রমাণও এই মাসের ১৭ রমজানের ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত। এ মাসের কদরের রাতে আল্লাহ কোরআন অবতীর্ণ করেছেন। যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে কদরের রাত ইবাদত করবে তার আগের করা গুনাহগুলো মাফ করে দেয়া হবে।
সুতরাং মানবতার মুক্তি নিশ্চিত করতে হলে যে উদ্দেশ্যে রমজানে কোরআন নাজিল করা হয়েছে সে কোরআনের সমাজ বিনির্মাণে আমাদের জান ও মাল উৎসর্গ করতে হবে। সত্যিই এ ধরায় যদি দ্বীন কায়েম হয় তাহলে মানবতার জয়গানে মহীরুহে হবে এই বিশ্বময়। দূর হবে আমাদের মধ্যে হানাহানি, হিংসা-বিদ্বেষ, উঁচ-নিচুর ভেদাভেদ। আসুন রমজানের প্রকৃত শিক্ষা নিজের জীবনে গ্রহণের মাধ্যমে সমাজকে আল কোরাআনের আলোয় উদ্ভাসিত করি।