হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন-”অত্যাচারীর বিরুদ্ধে অত্যাচারিতের অন্তরে যে-বিদ্বেষাগ্নির জন্ম হয়, তা অত্যাচারীকে ভস্ম করেই ক্ষ্যান্ত হয় না, সে-আগুনের শিখায় অনেক কিছুই দগ্ধীভূত হয়”। ছাত্রলীগ এখন সে আগুনেই পুড়ছে। তাছাড়া মানুষ যখন তার মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলে তখন তাকে পশুর সাথে তুলনা করা হয়। বাংলাদেশে ছাত্রলীগ আজ তার মনুষত্ব হারিয়ে সে পর্যায়ে এসে উপণিত হয়েছে। যারা মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলেছে অবশ্য আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে পশুর সাথেও তুলনা করতে রাজি হননি, কুরআনে- “বালহুম আদল” বলা হয়েছে। বরং পশু তথা চতুষ্পদ জন্তু থেকে আরো নিন্মপর্যায়ের বলে উল্লেখ করেছেন। ছাত্র-যুবসমাজ একটি জাতির অহংকার। সমাজ-সভ্যতার কান্ডারী। দেশকে এগিয়ে নেবার দিকপাল। বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার শক্তি। কিন্ত সেই শক্তিকে নষ্ট করে দিচ্ছে নোংরা ছাত্ররাজনীতি। নষ্ট ও ভ্রষ্ট ছাত্ররাজনীতির নামে ছাত্রসমাজকে সবচেয়ে কলংকিত, কুলুুষিত ও ক্ষতিগ্রস্থ করছে ছাত্রলীগ। ছাত্রদের হাতে খাতা-কলমের পরিবর্তে অস্ত্র, মেধার চর্চার পরিবর্তে মদগাজা, হিরোইন ফেনসিডিল, ইয়াবা, ক্লাস-পরীক্ষার বদলে নারী, অবৈধ টাকা দিয়ে ধ্বংস করে দিচ্ছে জাতীয় নেতৃত্ব তৈরীর এই খনিগুলোকে। জাতীবিনাসী এর থেকে ভয়ংকর কাজ আর কি হতে পারে?
ছাত্রলীগের নখরে আজ ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে আমাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানগুলো। সর্বশেষ সিলেট এমসি কলেজেরমেধাবী ছাত্রী খাদিজার উপর যে নারকীয়, পৈশাচিক ও ঘৃন্য হামলা চালিয়েছে তা কোন সভ্য সমাজে কল্পনা করা যায় না।সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিস। পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার সময় এমসি কলেজের পুকুর পাড়ে খাদিজাকে প্রকাশ্যে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা বদরুল আলম। দীর্ঘ দিন ধরেই সে খাদিজাকে উত্ত্যক্ত করছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। গুরুতর আহতাবস্থায় খাদিজা বর্তমানে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও ধিক্কারের ঝড় বইছে। ঘটনার পরই প্রত্যক্ষদর্শীরা বদরুলকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন। এর আগেও একবার ইভটিজিংয়ের কারণে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছিল বদরুল। এবার তার বিচারের দাবিতে শিক্ষাঙ্গন উত্তাল। প্রতিদিনই বিক্ষোভ, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এই হিংস্রতার বিচার দাবি করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তবে বদরুল কমিটিতে থাকলেও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা তাকে দলের নয় বলে দাবি করছেন।
কোনোভাবেই দুর্নাম ঘোচাতে পারছে না দেশের অন্যতম প্রাচীন এ ছাত্র সংগঠনটি। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে একের পর এক খুনাখুনি, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে ছাত্রীর ওপর নৃশংস হামলা, শিক্ষক লাঞ্ছনা, ইভটিজিং, মাদক, টেন্ডার, ছিনতাই ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন ক্ষমতাসীন দলের অন্যতম ভ্রাতৃপ্রতিম এ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও সংঘর্ষে একাধিকবার অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব ঘটনার পর দোষীরা নিজেদের কর্মী নয় বলে দাবি করেন দলটির শীর্ষ নেতারা। আবার কখনো কখনো সংগঠন থেকে নামমাত্র সাময়িক বহিষ্কার করেই দায়িত্ব শেষ করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। কিছু দিন পর দোষীদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে আবার দলে ফিরিয়ে নেয়ার ঘটনাও ঘটে। মূলত সে জন্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এমনি সময়ে অভিযোগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন- ”আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের কোনো ভাল কর্মকা-ই খবরে আসে না বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, “ছাত্রলীগ কোথাও কিছু করলেই সেটা পত্রিকাগুলো বড় করে দেখায়। পত্রিকাগুলোর সেনশনাল নিউজ না হলে চলে না। ছাত্রলীগ যে ভাল কাজ করে সেটা খবরে আসে না।’ গত শনিবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ইয়ং বাংলা নামের একটি সংগঠনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দর্শকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে জয় এসব কথা বলেন। ( সূত্র, প্রথম আলো, ১৫ নভেম্বর ২০১৪)
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বলেছেন, -”একটি মেয়েকে একটি ছেলে নির্মমভাবে কোপাল। এত মানুষ দাঁড়িয়ে থেকে দেখেছে, ছবি তুলেছে। কারো মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত হলো না। এটি দুঃখজনক”। জাতি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চায় ছাত্রলীগকে সংশোধনের জন্য আদৌ কি তাঁর দলের কোন কর্মসূচী আছে? বরং শিক্ষা ব্যাবস্থার সকল স্তর থেকে ইসলামের নাম-নিশানা পর্যন্ত মুছে দিচ্ছে। তাছাড়াঅপকর্ম করতে করতে ছাত্রলীগের চরিত্র এখন হিমাংকারের নিচে অবস্থান করছে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এক সময় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের দায়ে অভিবাবকত্ব ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু বিগত সময়ে প্রমানিত হয়েছে এটা ছিল শুধুই একটি আইওয়াশ মাত্র। সমাজবিজ্ঞানীরা ভালো বলতে পারবেন- এমন কোন অপরাধ কি এখনো বাকী আছে যার সাথে ছাত্রলীগ সম্পৃক্ত নয়? সমাজের মানুষের এখনো অজানা এমন অনেক অপরাধ হয়তো ছাত্রলীগ করছে। হত্যা, লুটপাট, জ্বালাও-পোড়াও, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, ছিনতাই, ভর্তি বানিজ্য, সিট দখল, হল দখল ও নারী নির্যাতন, শিক্ষক লাঞ্ছনা, অস্ত্রবাজীর আরেক নাম ছাত্রলীগ। এই সংগঠনের সহিংশতা এখন ভয়ংকর আকার ধারণ করেছে।
সমাজের বিশিষ্ট নাগরিকগণ একবার পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে ছাত্রলীগের সংশ্রব ত্যাগ ও রাজনীতি নিষিদ্ধের আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ একবার বলেছেন’ ছাত্রলীগের অপকর্মের দায়িত্ব তারা নিবেনা। ইতিমধ্যে রাজীব হত্যা মামলায় আদালত কর্তৃক ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীর মৃত্যুদন্ড সহ বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি হয়েছে। ফলে ছাত্রলীগ এখন আদালত কর্তৃক সন্ত্রাসী ছাত্রসংগঠন হিসেবে স্বীকৃত।
২০১২ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কুপিয়ে হত্যা করে বিশ্বজিৎ দাসকে। নৃশংস এ হত্যাকা- তখন পুরো জাতির বিবেককে নাড়া দেয়। পরে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ওই ঘটনায় ছাত্রলীগের কয়েক নেতার বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। সুতরাং ছাত্রলীগ আদালত কর্তৃক স্বীকৃত অপরাধী সংগঠন। তাই সন্ত্রাসী, জঙ্গি ও সহিংশতাকারী সংগঠন হিসেবে কি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হবে?
মহাদূর্যোগের মহাপ্রলয়ের মতই আজ আক্রান্ত আমাদের নতুন প্রজন্ম গড়ার কারখানাগুলো। এখন অতিক্রম করছে ইতিহাসের ক্রান্তিকাল। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষনার রাত থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যে তান্ডব শুরু হয়েছিল তা আজ অবদি অব্যাহত। সর্বশেষ সিলেট এমসি কলেজের মেধাবী ছাত্রী খাদিজা সেই হিংস্র, জঘন্য, পৈশাচিক, ভয়ংকর দানবের আক্রমনের শিকার হয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন আর ছাত্ররাজনীতি নেই, আছে ছাত্রলীগ নামক মানুষ খেকোদের অস্ত্রের মহড়া। শেখ মুজিবের সূর্য সন্তানরা আমাদের ঐতিহ্যমন্ডিত গৌরবোজ্জল ছাত্ররাজনীতিকে এক কঠিন পরীক্ষার কাঁঠগড়ায় এনে দাঁড় করিয়েছে। তাদের ভয়ংকর অপকর্মের প্রভাব এবার এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে আওয়ামী-বাম-শিক্ষকদের উপর শয়তানের মতই ভর করছে। ফলে ছাত্রলীগ-পুলিশলীগ-আর শিক্ষক লীগের রাহুর গ্রাস চিবিয়ে খাচ্ছে আমাদের শিক্ষাব্যাবস্থাকে। যখন জাফর ইকবালের মত শিক্ষকরা “ছাত্রলীগকে শাস্তি দেয়া অন্যায়” শিরোনাম দিয়ে পত্রিকায় কলাম লেখেন তখন এ জাতির অধপতনের মাত্রা বুঝতে কারোরই বাকী থাকেনা।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অব্যাহত চরম নৈরাজ্য ও অস্থিরতার কারণে একাডেমিক ও রাজনৈতিক সঙ্কটে ইতিহাসের বিপজ্জনক রূপধারণ করেছে। দলীয়করণ, নেত্রী তোষন নীতি, আত্নীয়করণ, সরকারি হস্তক্ষেপ, অনিয়ম, দুর্নীতি, সন্ত্রাস সহ আওয়ামী শিক্ষক ও ছাত্রলীগের একক রাজত্ব কায়েমের নষ্ট ও ভ্রষ্ট রাজনীতি। দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রাজনৈতিক হাঙ্গামা, সন্ত্রাস ও সেশনজটের কারণে অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তানদের অন্যান্য দেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য পাঠাচ্ছে। এতে দেশের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় হচ্ছে, পাচার হয়ে যাচ্ছে জাতীয় সম্পদ মেধা। ফলে এদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিজাতীয় ভাবধারায় মগজ ধোলাই হয়ে নিজ ঐতিহ্য ও শেকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। যা বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য সংকটাপন্ন।
অথচ আমাদের শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় বাহবা কুড়ানোর নামে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ‘ঢেলে সাজানো’র চিত্তাকর্ষক ঘোষনা দিচ্ছেন বার বার। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গেছে, দুর্নীতি, অথর্বতা, পরিকল্পনাহীনতা ও লক্ষ্যহীনতা আমাদের কীটদষ্ট শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। নৈতিক অধঃপতন, মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং অভিরুচির বিকৃতি আমাদের এই গোটা শিক্ষাব্যবস্থায় ধস নামিয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতির দুষ্ট অপচক্র কর্মজাল বিস্তার করেছে। শিক্ষার সঙ্গে ধর্মীয় নৈতিকতা, মানবিক সত্তার উৎকর্ষ সাধন, সামাজিক মূল্যবোধ, আমাদের ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাকেও শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বিত করতে হবে। তার পরিবর্তে বর্তমান সরকার সেক্যুলার শিক্ষাব্যাবস্থার নামে ধর্মবিমূখ নতুন প্রজন্ম তৈরীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এই মহামারী প্রকট আকার ধারণ করবে।
বর্তমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এই দশার পেছনে অন্য যে কারণটি সক্রিয় তা হলো জাতীয় নেতাদের অসততা, স্বার্থপরতা ও ক্ষমতার লোভ, চরিত্রের অধঃপতন সমান্তরালে ছাত্রনেতাদেরর চারিত্রিক স্খলন ঘটছে। একশ্রেনীর নেতারা ক্ষমতায় আরোহণের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করছে ছাত্রদেরকে। ছাত্রদের হাতে অস্ত্র ও টাকা তুলে দিয়ে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তির মোকাবেলা করার জন্য মাঠে নামানো হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই ছাত্ররা হয়ে পড়ছে মেধাশূন্য ও পেশাদার সন্ত্রাসী। মাদকদ্রব্যে আসক্তি করিয়ে লেখাপড়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে গড়ে তোলা হচ্ছে দলীয় ক্যাডার বাহিনী। ফলে ক্যাম্পাসগুলোতে চালু হয় এক অসুস্থ রাজনৈতিক কালচার। সরকারি ও বিরোধী উভয় ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাস ও দৌরাত্মে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কখনো অশান্ত হয়, কখনো বন্ধ হয়, পরীক্ষা পিছিয়ে যায়, সেশনজট বাড়তে থাকে। মেধাবী ছাত্ররা হতাশ হয়ে পরিণত হয় ছাত্রসংগঠনের ক্যাডারে। লেখাপড়া করতে এসে বিশ্ববিদ্যলয় থেকে বেরিয়ে যায় সন্ত্রাসী হয়ে। আবার কখনো অ-কালে ঝরে পড়ে অনেক নক্ষত্র। আমাদের জাতীয় নেতৃবৃন্দের কোন রকম সহানুভূতি নেই ছাত্রসমাজের প্রতি। কারণ নেতারা তাদের সন্তানকে লেখাপড়ার জন্য দেশের বাইরে পাঠান, যেখানে সন্ত্রাস বা সেশনজট নেই। তাই কার সন্তান ক্ষতিগ্রস্ত হলো তা নিয়ে নেতাদের কোন মাথা ব্যাথা থাকে না।
আমাদের দানব ছাত্ররাজনীতি একের পর এক কেড়ে নিচ্ছে জাতির সম্ভাবনাময় তরুন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাণ। আমাদের চোখের সামনে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে জাতি গড়ার কারখানা উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। আমাদের প্রধানমন্ত্রী কি বলতে পারবেন তার শাসনামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কতজন মেধাবী ছাত্র নিহত হয়েছে? কত মায়ের বুকখালি করেছে ছাত্রলীগ আর পুলিশের বুলেট? সন্তানহারা বাবা-মায়ের আহাজারি আজ বাংলার আকাশ-বাতাসকে প্রকম্ভিত করছে। আর সেই নাড়ীচেড়া মায়ের সন্তানটি যদি হয় পরিবারের আশা-ভরশার একমাত্র অবলম্বন!! তাহলে আছে এর কি কোন সমাধান? ক্ষমতাসীনরা কি খাদিজারা বাবা-মায়ের সেই আহাজারি আর কান্নার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন? এ জন্য হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন-”ক্ষমতাপ্রাপ্ত রাজপুরুষের অত্যাচার ও বিচারাসনে বসিয়া বিচারকের অবিচারের মতো মন্দ কর্ম আর নেই। দেশে এখন এ দুটোই চলছে।
মুলত ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা এখন অস্ত্রবাজি করতে গিয়ে হয়ে পড়েছে মেধাশূন্য ও সন্ত্রাসনির্ভর। তাই বেছে নিয়েছে সন্ত্রাস ও হানাহানির পথ। ছাত্ররাজনীতির আদর্শিক দেউলিয়াপনার ও শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের অসৎ কর্মকান্ডের বিপরীতে ইসলামী ছাত্রশিবির তাদের মেধা, সততা ও দেশপ্রেমের চেতনার সাক্ষর সবাইকে আকৃষ্ট করছে। ছাত্রকল্যাণ ও জনকল্যান মুলক কাজের মাধ্যমে সাধারণ ছাত্র-শিক্ষক সহ সর্বপর্যায়ে হয়ে উঠছে জনপ্রিয়তা। সেই টেনশানও ভর করেছে আওয়ামী-বামদের মধ্যে। ছাত্রলীগের অস্ত্রবাজির এই নোংরা রাজনীতি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ছাত্রলীগ অচিরেই বাম ছাত্রসংগঠন গুলোর মত ব্যানার সর্বস্ব সংগঠনে পরিণত হবে। আগামী প্রজন্মের জীবন রক্ষার্থে সোচ্চার হতে সকল নাগরিক সমাজকে। তাই দেশ-জাতি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বার্থে এ সন্ত্রাসী হায়েনাদের লাগাম টেনে ধরতে হবে এখনই।