মানবজাতির কল্যাণে আল্লাহ প্রদত্ত সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত মহাগ্রস্থ আল-কুরআন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুক্তির সনদ আল কুরআন। এই কিতাব সার্বজনীন এবং একমাত্র পরিপূর্ণ জীবনবিধান। এর নীতিমালা বর্ণ, গোষ্ঠী, ধর্ম ও ভৌগলিক সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে মানবতা ও সার্বজনীনতার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করেছে। এটি শ্বাসত জীবনাদর্শ। আল কুরআন কি ইতিহাস ? আইনের গ্রন্থ ? না বিজ্ঞান ? কবিতার গ্রন্থ!! না এর কোনটিই নয়। আল¬াহ তাআলা বললেন: ‘হুদাল লিল মুত্তাকিন’ অর্থাৎ এই কোরআন মুত্তাকিদের জন্য হিদায়াত বা সঠিক সরল পথনির্দেশ। (২:২)। আল্লাহ বলেন- ”আমি যদি এই কুরআনকে কোন পাহাড়ের ওপর নাযিল করতাম তাহলে তুমি দেখতে পেতে তা আল¬াহর ভয়ে ধসে পড়ছে এবং ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। আমি মানুষের সামনে এসব উদাহরণ এ জন্য পেশ করি যাতে তারা (নিজেদের অবস্থা সম্পর্কে) ভেবে দেখে”। (হাশর- ২১)
আল্লাহ বলেন“এটি তো (আল কোরআন) কাল্পনিক কোন বক্তব্য নয় বরং পূর্বের সমস্ত কিতাবের সত্যতা প্রমাণকারী আর এতে সকল বিষয়ের বিস্তারিত আলোচনা সন্নিবেশিত আছে।” (১২:১১১)। হযরত আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত-রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেনঃ যে বস্তু খোদা হতে নির্গত অর্থাৎ কুরআন, তোমাদের আল্লাহর নিকট ফিরে যাওয়ার ও তাঁর নৈকট্য লাভের জন্য ঐ বস্তু অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ আর কিছুই হতে পারে না। (হাকাম, আবু দাউদ) আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন যে, প্রত্যেক বস্তুর একটি গৌরবের বিষয় আছে যার দ্বারা তা গৌরবান্বিত হয়। কিন্তু আমার উম্মতের সৌন্দর্য ও গৌরবের বিষয় হল পবিত্র কুরআন। আমি এ কুরআনের অবতরণ প্রক্রিয়ায় এমন সব বিষয় অবতীর্ণ করছি যা মুমিনদের জন্য নিরাময় ও রহমত এবং জালেমদের জন্য ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করে না (ইসরা- ৮২)
মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে বলা হয়েছে- ”তোমার ওপর এই যে ফরমান নাযিল করা হয়েছে এটা অবশ্যি তাদের অনেকের গোয়ার্তুমী ও অবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেবে। কিন্তু অস্বীকারকারীদের অবস্থার জন্য কোন দুঃখ করো না”। (মায়েদাহ- ৬৮) পৃথিবীতে একমাত্র আল কুরাআন ব্যাতিত এমন কোন গ্রন্থ নেই যাতে মানবজীবনের সকল প্রয়োজনের ও সমস্যার সমাধান সন্নিবেশিত রয়েছে,সুবাহানাললাহ।
আল কুরআনে চ্যালেঞ্জ
আল কোরআনের প্রারম্ভেই ঘোষিত হয়েছে,“জালিকাল কিতাবু লা-রাইবাফিহ”। অর্থাৎ এই গ্রন্থ সন্দেহ, সংশয় ও ত্র“টিমুক্ত,সম্পূর্ণ নির্ভুল। তারা কি একথা বলে, পয়ম্বর নিজেই এটা রচনা করেছে? বলো , “তোমাদের এ দোষারুপের ব্যাপারে তোমরা যতি সত্যবাদী হয়ে থাকো তাহলে এরই মতো একটি সূরা রচনা করে আনো এবং এক আল¬াহকে বাদ দিয়ে যাকে ডাকতে পারো সাহায্যের জন্য ডেকে নাও” (ইউনুস- ৩৮) এজন্যই আল্লাহ বলেন-”তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেনি, নাকি তাদের মনের ওপর তালা লাগানো আছে? (মোহাম্মদ- ২৪)
কুরআন শৈল্পিক সৌন্দর্য-
মহাগ্রস্থ আল কোরআনের বাচনভঙ্গি ও অন্তর্নিহিত ভাবধারায় আরবগণ এতটাই বিমোহিত ও আশ্চর্যান্বিত হন কোরআনের তেলাওয়াত শোনার সাথে সাথে কোরআনের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছেন আজও হচ্ছে। আল্লাহ তা’য়ালা বলেন- সাচ্চা ঈমানদার তো তারাই আল্লাহকে স্মরণ করা হলে যাদের হৃদয় কেঁপে ওঠে। আর আল্লাহর আয়াত যখন তাদের সামনে পড়া হয়, তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা নিজেদের রবের ওপর ভরসা করে।
যখনই মানুষের সামনে আল্লাহর কোন হুকুম আসে এবং সে তার সত্যতা মেনে নিয়ে আনুগত্যের শির নত করে দেয় তখনই তার ঈমান বেড়ে যায়। এ ধরেনের প্রত্যেকটি অবস্থায় এমনটিই হয়ে থাকে। যখনই আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের হেদায়াতের মধ্যে মানুষ এমন কোন জিনিস দেখে যা তার ইচ্ছা আশা-আকাংখা, চিন্তা-ভাবনা মতবাদ, পরিচিত আচার-আচরণ, স্বার্থ, আরাম-আয়েশ, ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব বিরোধী হয় এবং সে তা মেনে নেয়। আল্লাহ ও রাসূলের বিধান পরিবর্তন করার পরিবর্তে নিজেকে পরিবর্তিত করে ফেলে এবং তা গ্রহণ করতে গিয়ে কষ্ট স্বীকার করে নেয় তখন মানুষের ঈমান তরতাজা ও পরিপুষ্ট হয়। পক্ষান্তরে এমনটি করতে অস্বীকৃতি জানালে মানুষের ঈমানের প্রাণ শক্তি নিস্তেজ হয়ে যেতে থাকে।
কুরআন ওমরকে অভিভূত করেছে
নবুওয়াতের নবম বর্ষে আবু জাহেল ইসলামের প্রসারে ক্ষুব্ধ হয়ে ঘোষণা করেন যে মুহাম্মদের মস্তক আমার কাছে হাজির করতে পারবে আমি তাকে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা এবং একশ উট পুরস্কার দিব। নাঙ্গা তলোয়ার হাতে যুবক ওমর চিৎকার করে বলল: “আমি মুহাম্মদের মস্তক না নিয়ে আর ফিরব না।” তিনি রাস্তায় শুনলেন তার বোন ও ভগ্নিপতি ইসলাম গ্রহণ করেছে। একথা শুনে রাগান্বিত বোনের বাড়ি গিয়ে বোন ও ভগ্নিপতিকে মারপিটে রক্তাক্ত করে ফেললেন এবং বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে তাদের পঠিত কোরআনের আয়াত দেখতে চাইলেন। যখন তিনি পড়লেন “ইন্নানি আনাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনা ফাআবুদনি ওয়া আকিমিছ সালাতা জিকরিহ।” অর্থাৎ নিশ্চয়ই আমি আল্লাহ, আমি ব্যতীত কোন ইলাহ বা উপাস্য নেই এবং আমার স্মরণের জন্য সালাত কায়েম কর।’ (সুরা ত্বহা-১৪)
এই আয়াতের অন্তর্নিহিত ভাবধারা ওমরকে অভিভূত করে ফেলল, আল¬াহর এই বাণীতে ওমরের হৃদয় মন আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল, তিনি অন্তর থেকে অনুভব করলেন এটা মানবরচিত নয়। প্রকম্পিত কণ্ঠে ওমর ঘোষণা করলেন, “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মদ (সা:) তাঁর রাসুল।”কোরআনের বাণীতে মুগ্ধ হয়ে ওমর ইসলামের কোলে আশ্রয় নিলেন। অথচ কোরআনে মানব জীবনের সব বিষয় সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এই কুরআন হযরত উমারকে এমনলাবে পাল্টে দিয়েছে আল্লাহর রাসুল (স:) বলেছেন আমার পওে আল্লাহ কাউকে নবী বানালে সে হতো উমার রা:।
আল কোরআনের অলৌকিক প্রভাবে অবিভূত হয়ে যারা ইসলাম কবুল করেন দক্ষিণ আরবের ইয়ামানী বিখ্যাত কবি তোফায়ের ইবনে দোসী’র তার গোত্রের সকল লোক নিয়ে ইসলাম কবুল করেন। বণি সলিম গোত্রের সর্ববিজ্ঞ ব্যক্তি কায়েস ইবনে নাসির রাসুলের (সা:) মুখ নিঃসৃত কোরআন শুনে ব্যাকুল হয়ে একহাজার লোক সহ ইসলাম কবুল করেন। আজো পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে
বিজ্ঞানী,আইনবেত্রা.শিল্পী.গায়ক,সাংবাদকি,কবি.খেলোয়াড়,মিডিয়া ব্যক্তিত্ব অনেকেই ইসলামের ছায়াতলে সামিল হচ্ছেন আলহামদুলিল্লাহ।
বিস্ময়কর!! আল কুরআন
সবচেয়ে বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে পৃথিবীতে এমন কোন গ্রন্থ নেই যার সমস্ত কপি সংগ্রহ পূর্বক ধ্বংস করে ফেললে তা আবার হুবহু নতুন করে তৈরি করা সম্ভব হবে। পৃথিবীব্যাপী অগণিত সংখ্যক কোরআনের হাফেজ রয়েছেন যারা পুনরায় তাদের স্মৃতিপট থেকে এই কোরআন পুন:লিপিবদ্ধ করতে সম্পূর্ণ সক্ষম। আল্লাহ বলেন ”আমি স্বয়ং এই গ্রন্থ নাজিল করেছি এবং আমি নিজেই এর রক্ষক। (সুরা হিজর-৯)।
আল-কুরআনই একমাত্র যুক্তিগ্রাহ্য ও বিজ্ঞানসম্মত ধর্মগ্রন্থ
ইসলাম ছাড়া আর কোন ধর্মই একখানা পূর্ণ ধর্মগ্রন্থ দিতে পারেনি। তেমন কুরআনে এমন সব বৈজ্ঞানিক তথ্য রয়েছে যা নাযিল হয়েছে ১৪ শত বছর পূর্বে আর তার সত্যতা প্রমাণ হচ্ছে আজ এই বিংশ শতাব্দীতে। এই কুরআনের এমন কতগুলি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আর কোন ধর্মগ্রন্থেই নেই। কুরআনের ভাব-ভাষা এমনভাবে সুবিন্যস্ত যার অনুরূপ একটি সুরা আজ পর্যন্ত কেউ তৈরি করতে পারেনি। যার উপস্থাপিত বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলি বা কোন কথাকেও আজ পর্যন্ত কেউ অবৈজ্ঞানিক বলে প্রমাণ করতে পারেনি। যেমন-
১.পদার্থ (গধঃঃবৎ) সম্বন্ধে বিজ্ঞান বলে ঃ সমস্ত পদার্থের মূলে আছে বিদ্যুৎ; অর্থাৎ আকাশ-পৃথিবীতে যাহা কিছু আছে, তাহা মূলত আর কিছুই নহে- বিদ্যুতেরই লীলা-খেলা। কোরআনে বলা হয়েছে ঃ “আল্লাহু নূরস্সামাওয়াতে অল্ আরদ্” অর্থাৎ ঃ আকাশ-পৃথিবীর সমস্তই আল্লাহ্্র নূও হইতে সৃষ্টি। তাহলে কোরআন যাহা বলিতেছে, আধুনিক বিজ্ঞান ঠিক সেই কথাই বলিতেছে নাকি?
বৈজ্ঞানীকেরা বলে ঃ কোন সুদূর অজ্ঞাতলোক হইতে প্রতিনিয়ত একটি জ্যোতিঃ আসিয়া আমাদের এই পৃথিবীতে পড়িতেছে; তাহার নাম “ঈড়ংসরপ ৎধফরধঃরড়হ” এই ঈড়ংসরপ ৎধফরধঃরড়হ যে কোথা হইতে আসিতেছে এবং ইহা যে কোহার জ্যোতিঃ বিজ্ঞান তাহা না জানিলেও ইসলাম তাহা জানে।
২.বিজ্ঞান বলে ঃ সমস্ত পদার্থের মূলে যে বিদ্যুৎ আছে, তাহা দুই প্রকারের ঃ ইলেক্ট্রনস (বষবপঃৎড়হং) এবং প্রোটনস্ (ঢ়ৎড়ঃড়হং); ইলেক্ট্রন হইতেছে ঋণাত্বক (হবমধঃরাব) বিদ্যুৎ আর প্রোটন হইতেছে ধনাত্বক (ঢ়ড়ংরঃরাব) বিদ্যুৎ। ইহাদিগকে পুরুষ ও স্ত্রী বিদ্যুৎ বলা হয়। ইহা দ্বারা স্পষ্টই আমরা দেখিতে পাইতেছি যে, সৃষ্টির কোন কিছুই একাকী পড়িয়া নাই, প্রত্যেক বস্তুই জোড়ায় জোড়ায় (রহ ঢ়ধরৎং) সৃষ্টি হইয়াছে। ঠিক ইহারই সহিত কোরআনের আয়াত মিলাইয়া পড়িতে হইবে।
৩.বিজ্ঞান বলে ঃ সমস্ত গ্রহ-নক্ষত্র মহাশূন্যের মধ্যে ঘুরিয়া বেড়াইতেছে; কেহই কোনখানে স্থির হইয়া নাই। কোরআনে বলা হয়েছে ঃ সূর্য চাঁদকে ধরিতে পারে না, রাত্রি দিনের নাগাল পায় না, সকলেই মহাশূন্যের মধ্যে ঘুরিয়া বেড়াইতেছে।” (৩৬ ঃ ৪০)
৪.বিংশ শতাব্দীর প্রধান বৈজ্ঞানিক থিওরী হইতেছে, সময়ের আপেক্ষিকতা (জবষধঃরারঃু ড়ভ ঃরসব)- সময়ের কোন স্থিরতা নাই। অবস্থার তারতম্য সময়ের তারতম্য ঘটিয়া যায়।-ইহাই এই থিওরীর সারাংশ। আইনস্টাইন বলেন ঃ ঞযবৎব রং হড় ংঃধহফধৎফ ঃরসব; ধষষ ঃরসব রং ষড়পধষ”- কিন্তু এই কথা আদৌ কোন নূতন আবিষ্কার নহে। চৌদ্দশত বৎসর পূর্বেই কোরআন এই সত্য ঘোষণা করিয়া রাখিয়াছে।
সর্বশেষ মিশরের তরুণ বিজ্ঞানী ডঃ রাশিদ খলিফার দ্বারা এমন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য আবিষ্কার হয়েছে যা সারা পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তিনি হিসাব করে দেখেছেন ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ এর মধ্যে অক্ষর রয়েছে ১৯টি। তিনি দাবি করেন গোটা কুরআনের মধ্যে এই ১৯ সংখ্যাটি বিশেষ গুরুত্ববহ। তিনি হিসাব করে দেখেছেন ‘ইসম’ শব্দটি ক্রুআনে ১৯ বার ব্যবহৃত হয়েছে। আর ‘বিসম’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ৩ বার। এই দুই সংখ্যাকে গুণ করলে গুণফল হয় ১৯ী৩=৫৭। এই ৫৭ বারই আল-কুরআনে ‘আর-রাহমান’ শব্দটা ব্যবহৃত হয়েছে। আর ‘রহম’ শব্দটি আল-কুরআনে এসেছে ১১৪ বার এবং এই ১১৪টিই হচ্ছে কুরআনের মোট সূরার সংখ্যা আর এই ১১৪ সংখ্যাই ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
পবিত্র কোরআন নারী-পুরুষের সমঅধিকার প্রদান করেছে। তাই সমগ্র গ্রন্থে ‘নারী’ ও ‘পুরুষ’ শব্দ দুটি এসেছে ২৩ বার করে। এখানে বিশেষভাবে বলা যায়, মানবদেহের ক্রমোজমের মোট সংখ্যা ৪৬টি। এর ২৩টি এসেছে মায়ের থেকে এবং ২৩টি বাবার থেকে। ‘মানুষ’ শব্দ ব্যবহার হয়েছে ৬৫ বার। এরপর মানুষের গঠনের বিলে¬ষণমূলক সংখ্যাগুলোর যোগফল বর্ণিত হয়েছে মাট ১৭ বার, শুক্রাণু ফোঁটা ১২ বার, ভ্রƒণ ৬ বার, অর্ধগঠিত মানবপিন্ড ৩ বার, হাড় ১৫ বার এবং মাংস ১২ বার। আর এর সবক’টির যোগফল হল ৬৫। এটি সত্যিই এক বিষ্ময়কর কুরআন।
অমুসলিমরাও স্বীকৃতি দিতে বাধ্য-
ঐতিহাসিক স্যার ইউলিয়াম মূর বলেন, “সম্ভবত বিশ্বে কুরআনই একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যা যুগ যুুগ ধরে অপরিবর্তিত অবস্থায় পবিত্রতা বজায় রেখে আসছে।” (সূত্র ঃবিশ্ব নবী সাঃ সম্বন্ধে অমুসলিম বাণী)।
কুরআনের ইংরেজি অনুবাদক খৃস্টান পন্ডিত ড. সেলর কুরআন সম্পর্কে অভিমত ব্যক্ত করে বলেন যে, ‘‘কুরআনের ন্যায় এমন সুগভীর অর্থবহ গ্রন্থ মানব রচনার বহির্ভূত। কুরআন একটি জীবন্ত মু’জিজা সদৃশ গ্রন্থ। যেই মুজিজা মৃতকে জীবিত করার চাইতেও বিস্ময়কর।’’
ডেভিড উয়োহার্টি বলেন, বিশ্বমানব মন্ডলী নিজেরা পুরোপুরি অনুসন্ধান চালিয়ে দেখুক। পড়ুক তারা পবিত্র কুরআন। বুঝতে চেষ্টা করুক, তখন তারা পেতে পারে সেই শান্তি, সবাই যার অনুসন্ধান করছেন। (গ্রন্থ দ্যা স্পিরিট অব দ্যা ইস্ট)।’
এডওয়ার্ড গিবন বলেন, ‘‘কুরআন আল্লাহর অদ্বিতীয়ত্বের গৌরবময় সাক্ষ্য। (গ্রন্থ-দি ডিক্লাইন এ্যান্ড ফল অব রোমান এম্পায়ার)।’’
স্যার উইলিয়াম ম্যূর পবিত্র কুরআনের উপর অভিমত রেখেছেন যে, ‘‘ধর্মের ব্যাপারে যেমন, নীতিতত্ত্ব ও বিজ্ঞানের সমুদয় ব্যাপারেও ঠিক তেমনই সমভাবে একমাত্র কুরআনই চূড়ান্ত এবং এর অধিকাংশ বাক্য এতই সুস্পষ্ট যে, প্রতিযোগী সাম্প্রদায়িকগণেরও তাতে প্রশ্নের কোনো অবকাশ থাকছে না।’’ (গ্রন্থ : দ্য লাইফ অব মুহাম্মদ)।
গীবন বলেন, ‘‘জীবনের প্রতিটি শাখায় কার্যকরী বিধান কুরআনে মওজুদ রয়েছে।’’
জানফাস এই বলে কুরআন সম্পর্কে উক্তি করেছেন যে, ‘‘প্রাচীন আরবীতে অবতীর্ণ কুরআন অত্যন্ত মনোরম ও আকর্ষণীয়। কুরআনের বাক্যবিন্যাস পদ্ধতি ও প্রকাশভঙ্গি খুবই মনোমুগ্ধকর। কুরআনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বাক্যগুলোতে যে বলিষ্ঠ ও শক্তিশালী যুক্তির অবতারণা করা হয়েছে, তা খুবই বিস্ময়কর। কুরআনের গর্ব যারা অন্য কোনো ভাষায় যথাযথ প্রকাশ করা খুবই কঠিন।’’ (গ্রন্থ : দি ইউসডম অব দি কুরআন
ইংরেজ লেখক টমাস কার্লাইল লেখেন, “ আমার নিকট কুরআন সত্যতা ও বিশ্বস্ততার একটি জীবন্ত প্রতীক। পৃথিবীকে সুন্দর ও শান্তিময় করা এই কিতাবখানির মাধ্যমে সম্ভব।।” ( সূত্র ঃবিশ্ব নবী সাঃ সম্বন্ধে অমুসলিম বাণী)
নেপোলিয়ান আরো বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, সে সময় খুব দুুরে নয়, যখন সব কটি দেশের বিজ্ঞ ও শিক্ষিত লোকদেরকে একতাবদ্ধ করতে এবং কুরআনের যে নীতি সমূহই একমাত্র সত্য ও যে নীতি সমূহই একমাত্র মানুষকে শান্তির পথে পরিচালিত করতে পারে, সেসব নীতির উপর ভিত্তি করে এক সমরূপ শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে।” তিনি আরো বলেন, “ইসলামের রুহানী শক্তি এমনই প্রখর যে, কোন সাহসী ব্যক্তি যদি দৃঢ়ভাবে কুরআন শরীফের মূলনীতি অনুসরণ করে তবে বিস্ময়কর জয়লাভ করতে পারে।” (সূত্র ঃবিশ্ব নবী সাঃ সম্বন্ধে অমুসলিম বাণী)
যে গ্রন্থ মহিমান্বিত করলো রামাদানকে
আল কুরআনই হলো রমজানের নিগূঢ় তত্ত্ব; রমজানের সঙ্গে কোরআনের সম্পর্কও সুগভীর। আল্লাহ বলেন, রমজান মাস এমন যে, তাতে কোরআন নাজিল করা হয়েছে; মানুষের জন্য পথপ্রদর্শকরূপে ও হিদায়াতের সুস্পষ্ট বর্ণনা ও সত্যাসত্যের পার্থক্য নির্ণয়কারী হিসেবে। (২: ১৮৫)। বছরের এক মাসব্যাপী রোজা পালনের উদ্দেশ্যে নিছক উপবাস থাকা নয়, এর মূল উদ্দেশ্য তাকওয়া অর্জন। মুত্তাকীর বৈশিষ্ট্য অর্জনের জন্য পবিত্র কুরআনে আল¬াহ তায়ালা ঘোষণা করেন, হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)
তাই রোজা মুসলমানদের চিন্তায় ও কর্মে তথা লেনদেন, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাজনীতি, প্রত্যেকটি কাজ সার্বক্ষণিক আল্লাহর উপস্থিতির পয়দা করাই আসল লক্ষ্য। জীবনের প্রত্যেকটি দিক ও বিভাগ আল্লাহর আইন মোতাবেক সমস্যার সমাধানের অন্যতম শিক্ষাই গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করে। রোজার উদ্দেশ্য হলো ক্রোধ, লোভ, মিথ্যা, অন্যায়, অবিচার, ত্যাগ করানো। মায়া, মমতা, আত্মত্যাগ, ন্যায়নীতি, সংযত ইনসাফ, সমবেদনা, মাখলুকের সেবা একাগ্রচিত্তে আল্লাহর ইবাদত করার যোগ্য করে নিজেকে গড়ে তোলা। এর মধ্য দিয়ে পয়দা হয় ভয় ও আমানতদারি। সমাজে সূচিত হয় সুখ-সমৃদ্ধি, সুশৃঙ্খলতা, উন্নতির ধারা।
মহাগ্রন্থ আল-কোরআনের আলোকে চলা ও এ আইন সমাজ এবং রাষ্ট্রে বাস্তবায়নের একজন সৈনিক হিসেবে ব্যক্তিকে প্রশিক্ষিত করার জন্য রোজা ফরজ করেছেন। সত্য এবং মিথ্যার যে চিরন্তন দ্বন্দ্ব তথা কোরআন যে ফোরকান, এর প্রমাণও এই মাসের ১৭ রমজানের ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য তারই সাক্ষ্যবহন করে।
আল কুরআনে বলা হয়েছে-”আল্লাহর পথে জিহাদ করো যেমন জিহাদ করলে তার হক আদায় হয়। (সুরা হজ্জ- ৭৮) আল্লাহ বলেন-তোমাদের যুদ্ধ করার হুকুম দেয়া হয়েছে এবং তা তোমাদের কাছে অপ্রীতিকর। হতে পারে কোন জিনিস তোমরা পছন্দ করো অথচ তা তোমাদের জন্য খারাপ। আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না। (সূরা বাকারা- ২১৬)
তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে, এবং কোন অত্যাচারীর অত্যাচার ভয় করে না। (সূরা মায়েদাহ- ৫৪) মুয়ায ইবনে জাবাল (রা.) হতে বর্ণিত। নবী করীম (স) বলেছেন ঃ যে মুসলমান উটের দুধ দোহনের সমপরিমাণ সময় আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে, তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়। (তিরমিযী) (এই ধরনের লোকদের জানা উচিত ) আল্লাহর পথে তাদের লড়াই করা উচিত যারা আখেরাতের বিনিময়ে দুনিয়ার জীবন বিকিয়ে দেয়। তারপর যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে লড়বে এবং মারা যাবে অথবা বিজয়ী হবে তাকে নিশ্চয়ই আমি মহাপুরস্কার দান করবো। (সূরা নিসা- ৭৪) আবু সাঈদ (রা.) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেনঃ স্বৈরাচারী যালেম শাসকের সামনে সত্য কথা বলা সর্বোত্তম জিহাদ।
সুতরাং মহাগ্রন্থ আল-কোরআন ও হাদিসের আলোকে আজকের যুগের মুসলমানদের চিন্তা করা উচিত তারা জিহাদ ফি-সাবিলিল্লাহ থেকে কত দূরে। এজন্যই মুসলমানদের আজ এই পরিণতি। সুতরাং মানবতার মুক্তি নিশ্চিত করতে হলে যে উদ্দেশ্যে রমজানে কোরআন নাজিল করা হয়েছে সে কোরআনের সমাজ বিনির্মাণে আমাদের জান ও মাল উৎসর্গ করতে হবে। সত্যিই এ ধরায় যদি দ্বীন কায়েম হয় তাহলে মানবতার জয়গানে মহীরুহ হবে এই বিশ্বময়।
ওমর (রা.) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, আল্লাহ নিশ্চয়ই এ কুরআনের দ্বারা অনেক জাতিকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছেন এবং এ কুরআনের বিধান (অমান্য) করার কারণে অনেক জাতির পতন ঘটেছে। (মুসলিম) তাহলে বুঝা ভিত্তিক একটি সমাজ বিনির্মাণে প্রত্যেক মুসলমানকে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহকে আদর্শ গ্রহণ করতে হবে।
আলী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন ঃ রাসূলুল্লাহ (স)-কে বলতে শুনেছি যে, সাবধান থাক! অচিরেই ফিতনা বা অশান্তি সৃষ্টি হবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তা হতে বাঁচার উপায় কি? তিনি বললেন, আল্লাহর কিতাব, যাতে তোমাদের পূর্ব পুরুষদের ঘটনা বিদ্যমান এবং ভবিষ্যতকালের খবরও বিদ্যমান। আর তাতে তোমাদের জন্য উপদেশাবলী ও আদেশ-নিষেধ রয়েছে, তা সত্য এবং অসত্যের মধ্যে ফায়সালা দানকারী এবং তা উপহাসের বস্তু নয়। যে কেউ তাকে অহংকার পূর্বক পরিত্যাগ করে, আল্লাহ তাকে ধ্বংস করেন। আর যে ব্যক্তি তার হিদায়াত ছাড়া অন্য হিদায়াতের সন্ধান করে আল্লাহ তাকে পথভ্রষ্ট করেন। তা (কুরআন) আল্লাহর দৃঢ় রশি, যিকরুল হাকীম এবং সহজ ও সরল পথ, যা দ্বারা মানুষের অন্তঃকরণ কলুষিত হয় না এবং তা দ্বারা মানুষ সন্দেহে পতিত হয় না ও ধোঁকা খায় না। তা দ্বারা আলেমগণ তৃপ্তি লাভ করে না অর্থাৎ আলেমগণ তা হতে অধিক জ্ঞান লাভ করতে চায়। বার বার তা পাঠ করলেও পুরানো হয় না, তার অভিনবত্বের শেষ হয় না। যখনই জ্বীন জাতি তা শুনল, তখনই সাথে সাথে তারা বলল, নিশ্চয়ই আমরা আশ্চর্য কুরআন শুনেছি, যা সৎ পথের দিকে লোককে ধাবিত করে। সুতরাং আমরা এর প্রতি ঈমান এনেছি।” যে ব্যক্তি কুরআন মোতাবেক কথা বলল, সে সত্যই বলল। যে তাতে আমল করল, সে সাওয়াব প্রাপ্ত হল, যে কুরআন মোতাবেক হুকুম করল, সে ন্যায় বিচার করল। যে ব্যক্তি কুরআনের দিকে মানুষকে ডাকবে, সে সৎ পথ প্রাপ্ত হবে। (তিরমিযী)
জিয়াদ ইবন লাবিদ হতে বর্ণিত। একদা রাসূলুল্লাহ (স) কিছু আলোচনা করতে গিয়ে বললেন, এটা ইলম উঠিয়ে নেয়ার সময়। আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! ইলম কিভাবে বিলুপ্ত হবে? অথচ আমরা কুরআন পড়ি এবং আমাদের সন্তাদেরকে পড়াই। আর তারা তাদের সন্তানদেরকে পড়াবে। এভাবে কিয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে। তিনি বললেন, যে জিয়াদ, তোমার জন্য তোমার মা কাঁদুক তোমার বোকামীর জন্য)। আমি তোমাকে মদীনার জ্ঞানীদের অন্যতম মনে করতাম। তুুমি কি দেখ না, ইয়াহুদীরা তাওরাত কিতাব পাঠ করে এবং নাছারারা ইনজিল কিতাব পাঠ করে, অথচ তারা এর মধ্যে যা আছে, তা মোটেই আমল করে না। (আহমদ, ইবনে মাজা)
হে মানব সমাজ! তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের ওপর যা কিছু নাযিল করা হয়েছে তার অনুসরণ করো এবং নিজেদের রবকে বাদ দিয়ে অন্য অভিভাবকদের অনুসরণ করো না। কিন্তু তোমরা খুব কমই উপদেশ মেনে থাকো। (আরাফ- ৩)
মহাগ্রন্থ আল কুরআনে মানব সমাজের সব শ্রেনী পেশার মানুষের অধিকার সংরক্ষিত হয়েছে। এই কোরআনের দৌলতে সমাজ থেকে ভীতি, সন্ত্রাস আর অরাজকতা মূলোৎপাটিত হয়েছে। মানবাধিকার, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, উদার নৈতিকতা, পরমতসহিষুষ্ণতা আর জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার সৌহার্দ্যপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করেছে জগতের মহাবিস্ময় এই কোরআন। রমজান শুধু কোরআন নাজিলের মাস নয়; বরং রমজান মাস হলো কোরআন শিক্ষণ প্রশিক্ষণ, কোরআন পঠন-পাঠন ও কোরআন চর্চার মাস এবং সর্বোপরি রমজান মাস হলো জীবনের সর্বক্ষেত্রে কোরআন অনুশীলন ও বাস্তবায়নের মাস।
কুরআনকে আঁকড়ে থাকলেই সফলতা
মানবতার বন্ধু মহানবী (সা.) বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে, সোয়া লাখ সাহাবায়ে কেরামের জনসমুদ্রে আল কোরআনের গুরুত্ব ও তাৎপর্যকে উচ্চকিত করে তুলে ধরে বলেন- “এই কোরআনকে যতদিন আঁকড়ে থাকবে ততদিন মুসলমানরা বিভ্রান্ত হবে না, বিচ্ছিন্ন বা দুর্বল হবে না এবং কোনো শক্তির কাছেই পদাবনত হতে হবে না বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন”। মহাকবি ইকবাল তাই বলেছেন- আগেকার দিনের মুসলমানরা এই কোরআনকে আঁকড়ে ধরার কারণেই বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব দিয়েছে। আর আজকের মুসলমানরা যদি নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বা পরাভূত হয়ে থাকে, তবে তার একমাত্র কারণ হলো তারা এই কোরআনকে ছেড়ে দিয়েছে। এই কোরআন মানবেতিহাসের সর্বনিকৃষ্ট যুগের সব অন্ধকার দূরীভূত করে সমাজ-সভ্যতাকে সত্য, ন্যায় আর ইনসাফের আলোকবর্তিকায় উদ্ভাসিত করেছিল। তাই আসুন রাষ্ট্র ও সমাজ থেকে আজ অন্যায়-জুলুম, হানাহানি, হিংসা-বিদ্বেষ, উঁচ-নিচুর ভেদাভেদ দূরিভূত করি। মাহে রামাদানের প্রকৃত শিক্ষা তাকওয়াভিত্তিক আল কোরআনের সমাজ গড়ে তুলি। এটাই হোক মুসলিম উম্মাহর অঙ্গিকার।
মানবতার বন্ধু মহানবী (সা.) বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে, সোয়া লাখ সাহাবায়ে কেরামের জনসমুদ্রে আল কোরআনের গুরুত্ব ও তাৎপর্যকে উচ্চকিত করে তুলে ধরে বলেন- “এই কোরআনকে যতদিন আঁকড়ে থাকবে ততদিন মুসলমানরা বিভ্রান্ত হবে না, বিচ্ছিন্ন বা দুর্বল হবে না এবং কোনো শক্তির কাছেই পদাবনত হতে হবে না বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন”। মহাকবি ইকবাল তাই বলেছেন- আগেকার দিনের মুসলমানরা এই কোরআনকে আঁকড়ে ধরার কারণেই বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব দিয়েছে। আর আজকের মুসলমানরা যদি নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বা পরাভূত হয়ে থাকে, তবে তার একমাত্র কারণ হলো তারা এই কোরআনকে ছেড়ে দিয়েছে। এই কোরআন মানবেতিহাসের সর্বনিকৃষ্ট যুগের সব অন্ধকার দূরীভূত করে সমাজ-সভ্যতাকে সত্য, ন্যায় আর ইনসাফের আলোকবর্তিকায় উদ্ভাসিত করেছিল। তাই আসুন রাষ্ট্র ও সমাজ থেকে আজ অন্যায়-জুলুম, হানাহানি, হিংসা-বিদ্বেষ, উঁচ-নিচুর ভেদাভেদ দূরিভূত করি। মাহে রামাদানের প্রকৃত শিক্ষা তাকওয়াভিত্তিক আল কোরআনের সমাজ গড়ে তুলি। এটাই হোক মুসলিম উম্মাহর অঙ্গিকার।