ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম
  • English
  • প্রচ্ছদ
  • জীবন বৃত্তান্ত
  • লেখালেখি
    • দারসুল কুরআন
    • দারসুল হাদিস
    • ইসলামী আন্দোলন
    • বাংলাদেশ
    • সংগঠন ও রাজনীতি
    • ধর্ম
    • ইতিহাস
    • প্রবন্ধ
    • অর্থনীতি
    • বিবিধ
  • তথ্যকোষ
    • বই
    • বক্তব্য
    • ছবি গ্যালারী
    • ভিডিও গ্যালারী
  • সংবাদ/কার্যক্রম
    • দাওয়াহ কার্যক্রম
    • শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ
    • তথ্য ও গবেষণা
    • বিবৃতি/বাণী
    • সংগঠন ও রাজনীতি
    • আইন ও মানবাধিকার
    • আন্তর্জাতিক
    • পরিবেশ ও কৃষি উন্নয়ন
    • বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি
    • যুব ও ক্রীড়া
    • শ্রমিক কল্যাণ
    • সমাজ কল্যাণ
    • সাহিত্য ও সংস্কৃতি
    • স্বাস্থ্যসেবা
  • যোগাযোগ
No Result
View All Result
Dr. Mohammad Rezaul Karim
  • প্রচ্ছদ
  • জীবন বৃত্তান্ত
  • লেখালেখি
    • দারসুল কুরআন
    • দারসুল হাদিস
    • ইসলামী আন্দোলন
    • বাংলাদেশ
    • সংগঠন ও রাজনীতি
    • ধর্ম
    • ইতিহাস
    • প্রবন্ধ
    • অর্থনীতি
    • বিবিধ
  • তথ্যকোষ
    • বই
    • বক্তব্য
    • ছবি গ্যালারী
    • ভিডিও গ্যালারী
  • সংবাদ/কার্যক্রম
    • দাওয়াহ কার্যক্রম
    • শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ
    • তথ্য ও গবেষণা
    • বিবৃতি/বাণী
    • সংগঠন ও রাজনীতি
    • আইন ও মানবাধিকার
    • আন্তর্জাতিক
    • পরিবেশ ও কৃষি উন্নয়ন
    • বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি
    • যুব ও ক্রীড়া
    • শ্রমিক কল্যাণ
    • সমাজ কল্যাণ
    • সাহিত্য ও সংস্কৃতি
    • স্বাস্থ্যসেবা
  • যোগাযোগ
Dr. Mohammad Rezaul Karim
No Result
View All Result

শহীদ মীর কাসেম আলীর অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে – ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম

সেপ্টেম্বর 2, 2019
শহীদ মীর কাসেম আলীর অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে – ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম

জন্মেও পর অনিবার্য সত্য হলো মানুষের মৃত্যু। রাজা-প্রজা, বিচারক-উকিল, ধনী-গরীর সবাইকে মরতে হবে। জবাবদিহি করতে হবে প্রতিটি কর্ম সম্পর্কে। কিন্তু আলোচনার বিষয় হচেছ বান্দাহ তাঁর মাবুদেও সন্তুষ্টির উপর অটল থেকে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে পেরেছে কি?। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নবী করিম (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, (কিয়ামতের মাঠে) পাঁচটি বিষয়ে জবাব না দেওয়া পর্যন্ত কোনো মানব সন্তানের পা উঠাতে দেওয়া হবে না। ক. জীবন কীভাবে শেষ করেছ? খ. যৌবন কিভাবে অতিবাহিত করেছ? গ. ধনসম্পদ কিভাবে উপার্জন করেছ? ঘ. কোন পথে ধনসম্পদ তা ব্যয় করেছ? এবং ঙ. অর্জিত জ্ঞানের কতটুকু আমল করেছ? এর উপরই নির্ভর করছে মানুষের জীবনের সফলতা ও ব্যার্থতা। মুমীনরা তাদের জীবনকে আল্লাহর পথে হিসাব করে ব্যায় করে। মুমীনের জন্য দুনিয়ার জীবন জেলখানা সমতুল্য। দুনিয়ার পরীক্ষা-বিপদ-মুসীবতকে অনন্তকালের পুরস্কার জান্নাত লাভের আশায় বরণ করে নেয় হাসি মুখে। মৃত্যু তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে তোহফা বা উপহার।

আজ-কাল মানুষ ক্ষমতার জোরে সব পেতে চায়। কিন্তু আইন করে মানুষের সম্মান ও ভালবাসা অর্জন করা যায়না। আজকের রাষ্ট্র যন্ত্র ব্যবহার করে ইসলামী আন্দোলনের সিপাহসালারদের যতই জুলুম-নির্যাতন, অপমান, করে হত্যা করার চেষ্টা করা হোক না কেন। আল্লাহ তায়ালা যাকে চান সম্মানিত করার তাকে কেউ অপমানিত করতে পরবেনা। আজ এটা দিবা লোকের মত পরিষ্কার যে অন্যায়, বেআইনী এই রাজনৈতিক বিচার কাজের সাথে যারা জড়িত তারা দুনিয়াতেই লাঞ্ছনা-গঞ্জনা, অপমানিত হচ্ছে। আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা যে, সত্য তার প্রমাণ গোটা জাতি প্রত্যক্ষ করছে।

কারণ আল্লাহ যদি কাউকে অপমানিত করতে চান তাহলে তাকে কেউ রক্ষা করতে পারেনা। এক সময় যিনি এই বিচার কার্য সম্পাদনে প্রধান বিচারপতির আসনে ছিলেন তিনি আজ লাঞ্ছনার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন কি?। অন্য চেলা চামুন্ডারাও আপমানিত হতে শুরু করছে। ব্যারিষ্টার তুরিণ আফরোজ মীর কাশেম আলী সাহেবদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবি। সারাদিনই বলা যায় মিডিয়ার সামনে জামায়াত নেতাদের নামে মিথ্যে কল্পকাহিনী বানিয়ে চরিত্রের মাঝে কলঙ্ক লেপনের অপচেষ্টা করতেন। এতে বাংলা ব্যাকরনের সকল খারাপ বিশেষন যোগ করে বক্তব্য দিতেন। সেই মিথ্যা অভিযোগে তাদের ফাঁসি পর্যন্ত কার্যকর হলো। সেই কাগজে বক্তব্য এই নেতাদের সম্পর্কে এর আগে কেউ শুনেনি।

কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে এত মিডিয়া ট্রায়াল তাদের বিদায়ে এক হৃদয় বিদারক অবস্থার তৈরী হলো। তাহলে এটা কিভাবে সম্ভব? এই শহীদ নেতৃবৃন্দের জন্য তাদের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, স্ত্রী-পুত্র, মেয়ে নেতা-কর্মী এমনকি দেশের জনগন চোখের পানিতে বুক ভাসিছেয়ে, এখনো কাঁদছে। অনন্তকাল ধরে চোখের পানি ছেড়ে দোয়া করতে থাকবে। বায়তুল্লাহর গেলাপ ধরে কাঁদছে অনেকেই। তাদের অবদান অত্যান্ত শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছে। তাদের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান থেকে দেশের কোটি-কোটি মানুষ উপকৃত হচ্ছে। অবিস্কার করা যায়নি কোন দুর্নীতি আর অনিয়ম। দেশে-বিদেশে জানাযা, দোয়া, প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধান,সংস্থা,বিশিষ্ট ব্যাক্তি বর্গ প্রতিবাদ ও সমবেদনা জ্ঞাপন করে নজির স্থাপন করেছে তা ইতিহাসে বিরল। এদেশে ক্ষমতার বাহিরে থেকেও যারা এমন বিরল সম্মানের পাত্র তা সত্যিই অভাবনীয়।

কিন্তু আশ্চর্যেও বিষয় হলো-ব্যারিষ্টার তুরিণ আফরোজ এর বৃদ্ধ মা নিজ সন্তানের চরিত্র সম্পর্কে যে কুতসিত, নোংরা বর্নানা সংবাদ সম্মেলনে দিয়েছেন তা কোন সভ্য সমাজে কল্পনা করা যায়!। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের মা সামসুন নাহার তসলিম। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে ল রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্বামী তসলিম উদ্দিন আহমেদ মারা যাওয়ার ১৮ দিন পর (২ মার্চ ২০১৭) তুরিন আমাকে বাসা থেকে এক কাপড়ে বের করে দেয়।  সামসুন নাহার তসলিম অভিযোগ করেন, অপরিচিত লোকদের রাত-বিরাতে ঘরে প্রবেশ নিয়ে দারোয়ান ও ভাড়াটিয়ারা অভিযোগ করলে তাদের সঙ্গে তুরিনের প্রায়ই ঝগড়া লাগত। এসব বিষয়ে নিষেধ করলে র‌্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নামে তুরিন ভয় দেখাত এবং বলত- ওরা সবাই তার বন্ধু। কিছু বললেই ৫৭ ধারায় গ্রেফতার করার ভয় দেখাত। গানম্যান দিয়ে ভয় দেখাত। সংবাদ সম্মেলনে তুরিন আফরোজের ছোট ভাই শাহনেওয়াজ শিশির বলেন, ক্ষমতার দাপটে ব্যারিস্টার তুরিন আমাকে এবং মাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন এবং হয়রানি করে আসছে। ব্যারিস্টার তুরিন শুধু ঢাকাতেই নয়, নীলফামারীতে চাচাতো ভাই ও বোনদের জমিজমা জিম্মি করে রেখেছে। তুরিণ আফরোজ এর মা বলেন ”এমন সন্তান যেন আর কোন মায়ের ঘরে না জন্মায়”। নিজের জন্মদাতা মায়ের মুখে নিজ সন্তান সম্পর্কে এমন বর্ণনা পরও জাতির বুঝতে বাকী থাকে কি? সত্যিই কারা প্রকৃত অপরাধী আর কারা নিরপরাধ।

আওয়ামী লীগ এভাবে গোটা জাতিকে বিভেদ, হিংসা আর অমানবিকতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। সমাজে আজ গণহত্যাকারী, খুনী, কোটি-কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনকারী, সশস্ত্র সন্ত্রাসী, দূর্নীতিবাজ, লম্পট, চরিত্রহীনরা এখন দেশপ্রেমিক। নিরাপরাধীদেরকে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে মিডিয়া ট্রায়াল আর বিকৃত উপস্থাপনার মাধ্যমে বানানো হচ্ছে মানবতা বিরোধী! এই সময় আর বেশী দিন চলবেনা। এর অবসান হতেই হবে।

সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা আর ব্যারিষ্টার তুরিণ আফরোজ সহ অনেকের অলপ সময়ের মধ্যে এই পরিনতি কেন? কারণ আল্লাহর ওয়াদা তিনি সত্যকে উদ্ভাসিত করবেন। মিথ্যাকে পদধলিত করে এই দুনিয়ার মানুষকে দেখিয়ে দেবেন দেখ হে! আমার বান্দার সত্য-মিথ্যাকে তোমরা চিনে নাও। তোমরা অনুধাবন কর।

সুতরাং শহীদ মীর কাশেম আলীদের উপর যে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অন্যায়-অবিচার,জুলুম-নির্যাতন হয়েছে তা স্পষ্ট করার দায়িত্ব আল্লাহ নিজে গ্রহন করেছেন। আরো করবেন। এর জন্য কাকে দিয়ে কোন কথা ফাঁস করাবেন, সবই তাঁরই দায়িত্ব।

শেষ সাক্ষাতের মীর কাসেম আলী বলেছেন, আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না। মৃত্যুদণ্ডের ঘটনায় আমি বিচলিতও নন। এই মৃত্যু শহীদী মৃত্যু। ‘যারা মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে মৃত্যুর মুখোমুখি করেছে তারা কখনোই জয়ী হবে না।’ সাক্ষাতের সময় তিনি পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে হাত তুলে মহান আল্লাহর কাছে দেশ ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য দোয়া করেন। তিনি বলেন, তার উপর জুলুম করা হয়েছে। একদিন এর অবসান হবে। তিনি বলেন, আমরাই চূড়ান্ত বিজয়ী হবো। তারা পরাজিত ও লাঞ্ছিত হবে।

শহীদ মীর কাসেম আলী মুলত ছিলেন একটি সম্ভাবনাম বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা। এটি শুধু একটি নামই নয় একটি ইতিহাসও বলা যায়। তিনি ছিলেন একজন উন্নয়নের রূপকার হিসেবে খ্যাত। মেধা, যোগ্যতা, পরিশ্রম, চিন্তা ও কর্মে তিনি বাংলার মাহাথির বললেও ভুল হবেনা। আজীবন চেষ্টা করেছেন মাতৃভূমিকে অপরুপ মহিমায় সাজানোর জন্য। নিজের উদ্ভাসিত কর্মে তিনি এখন নতুন প্রজন্মেও রোল মডেল। তাঁর মেধা, যোগ্যতা ও সফল কর্মে ঈর্ষান্বিত হয়ে আওয়ামীলীগ এই প্রাণপুরুষকে হত্যা করেছে। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

শহীদ মীর কাসেম আলী ক্ষণজন্মা একজন প্রতিভাবান উজ্জল নক্ষত্র। এদেশের ছাত্র জনতার প্রিয় কাফেলা ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা কেন্দ্রিয় সভাপতি ছিলেন তিনি। তিনি সকলের নিকট পরিচিত ও সমাদৃত প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, সংগঠক, শিল্প উদ্যোক্তা, সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা, জনকল্যাণ ও সমাজকল্যাণ মূলক অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের আবিষ্কারক হিসেবেই। ইসলামী ব্যাংকিং ও চিকিৎসা, শিল্প, মিডিয়ার ক্ষেত্রে সফল বাস্তবায়ন করে হাজার-হাজার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। পাশে দাঁড়িয়েছেন অসহায়, দরিদ্র জনগনের। তিনি আজ নেই। কিন্তু রয়েছে তার বিপুল কর্ম, নিজের হাতে গড়া অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। যা দেশের মানুষকে সেবা দিয়ে যাবে বহুকাল। শহীদ মীর কাসেম আলী বাংলার মানুষের হৃদয়ে জাগরুক থাকবেন শতাব্দী থেকে শতাব্দী। অবিস্বরণীয় হয়ে থাকবেন স্ব-মহিমায়।

শহীদ মীর কাসেম আলী প্রিয় জন্মভূমির কল্যাণে নিজের মেধা, যোগ্যতা দিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। একটি সপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে দিন রাত পরিশ্রম করে গেছেন। কিন্তু একজন দেশপ্রেমিক ও উন্নয়ন বান্ধব লোক যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হন, তবে তা ইতিহাসের এক অপদৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

মীর কাসেম আলীকে ন্যায় বিচারের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হযে়ছে। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে বলা হয়েছে “আল্লাহ তা’আলা কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম বিচারক নন?”(৯৫:৮) পৃথিবীর সকল নীতি-নৈতিকতা, মানবাধিকার লংঘন করে ইতোপূর্বে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আর যে ব্যক্তি জেনে বুঝে কোন মুমিনকে হত্যা করে, তার শাস্তি হচ্ছে জাহান্নাম। সেখানে সে চিরকাল থাকবে। তার ওপর আল্লাহর গযব ও তাঁর লানত এবং আল্লাহ তার জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন।” (৪ : ৯৩)

মীর কাসেম আলী ১৯৫২ সালের ৩১ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার সূতালরী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবা মীর তৈয়ব আলী সড়ক জনপথ বিভাগের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা ছিলেন। তার চাচা মীর মোশাররফ হোসেন সূতালরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন।

পিতার চাকুরির সুবাধে বিভিন্ন জেলায় থাকতে হয়েছে মীর কাসেম আলীকে। প্রাথমিক স্তরে পড়াশুনা করেছেন বরিশাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম এ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের যে যাত্রা শুরু হয়। মীর কাসেম আলী শিবিরের প্রতিষ্ঠাতা কেন্দ্রীয় সভাপতি। ১৯৭৯ সালে তিনি জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। তিনি কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা, কর্মপরিষদ ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য।

১৯৭৮ সালে আন্তর্জাতিক সংস্থা রাবেতা আলম আল ইসলামীর কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে তিনি কর্ম জীবন শুরু করেন। তাঁর রাজনীতি ছিল সমাজসেবা। গরীব-দুখী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ব্যাংক, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে গ্রাম, চরাঞ্চল ও পাহাড়ি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে তিনি সারা দেশে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছেন। পিছিয়ে পড়া চর ও পাহাড়ের জনগোষ্ঠীর মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছেন।

শহীদ মীর কাসেম আলী আল-কুরআনের একজন নিবেদিত খাদেম। বাংলাদেশে ব্যাংকিং জগতের আলোড়ন সৃষ্টিকারী, ইসলামী ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের অন্যতম। শুধুমাত্র ইসলামী আন্দোলন করার অপরাধেই তাঁকে হত্যা করতে যাচ্ছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার। তিনি মুসলিম, হিন্দু, খৃষ্টান ঐক্য ও সম্প্রীতি স্থাপনে ভূমিকা পালন ও দেশে বিদেশে মানবিক উন্নয়নে কাজ করেছেন। অসংখ্য প্রতিভার অধিকারী এই মহান ব্যক্তিত্বকে আওয়ামীলীগ আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে হত্যার হীন পথ বেছে নিয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- “ওই ঈমানদারদের সাথে তাদের শত্রুতার এ ছাড়া আর কোন কারণ ছিল না যে তারা সেই আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল।” (৮৫:৮)

এই সাহসী বীরেরা জীবন দিয়ে অন্যায়ের কাছে মাথা না নোয়াবার যে দীক্ষা আমাদের দিয়ে গেছেন তা থেকে এদেশের তরুন প্রজন্ম প্রেরণা লাভ করবে। মীর কাসেম আলীর সাথে শেষবারের মতো সাক্ষাৎ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। এর আগে সকালে তার দুই মেয়ে ফেসবুকে এ নিয়ে স্ট্যাটাস দেন। সুমাইয়া রাবেয়া লিখেছেন: ‘আমার আব্বু নরম মনের মানুষ। প্রতিবার বক্তব্য দিতে উঠলে কেঁদে ফেলতেন। এটা সবাই জানেন। এর আগে যখন দেখা করতে গিয়েছিলাম তখন আব্বুর চেহারায় বিন্দুমাত্র বিচলতা দেখিনি বরং সবার সাথে হাসিখুশি ছিলেন। তখন বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আব্বু, আমাদের ভাইবোনের জন্য আল্লাহর কাছে জান্নাতের সুপারিশ করবানা? আব্বু একগাল হেসে বললেন, শুধু তোমরা না, আমার নাতি-নাতনী, বউমা, জামাই সবার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করব। আমরা সবাই হেসে দিয়েছিলাম।

আজকে আবার আব্বুকে দেখতে যাচ্ছি। শেষবারের মতো। কাল আব্বু থাকবে না এ নিয়ে আমরা দুঃখিত নই। শাহাদাতের মর্যাদা কজনের ভাগ্যে জোটে? এ মৃত্যুর জন্যই তো সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আল্লাহ আমার আব্বুকে কবুল করে নিন।’ তাহেরা তাসনিম লিখেছেন: ‘সবাই আমার বাবা মীর কাসেম আলীর জন্য দোয়া করবেন যেন তিনি জান্নাতুল ফেরদৌসের বাসিন্দা হতে পারেন! আর আমাদের, তার পরিবারকে এই শোক কাটিয়ে ওঠার তৌফিক দেন এবং এ দেশ ও জাতিকে তার চলে যাওয়াতে অর্থনীতি ও দেশসেবায় যে অপূরণীয় ক্ষতি হবে, তা কাটিয়ে ওঠার তৌফিক দিন। আমিন”।

রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা না চাওয়ার মাধ্যমে লক্ষ-কোটি ছাত্র জনতার ঈমানী শক্তিকে শাণিত করেছে। সাহসী ও বীর সুলভ উচ্চারণ- অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কারীদের এক কাতারে আবদ্ধ করেছে। যারা এই নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে এই দেশকে নতজানু বানিয়ে তাদের লক্ষ হাসিল করতে চায় তাদের ষড়যন্ত্র বুমেরাং হবে ইনশাআল্লাহ্‌।

শহীদরা মৃত নন অমর। আল্লাহ বলেন- “আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তাদেরকে মৃত বলো না। তাঁরা আসলে জীবিত। কিন্তু তাদের জীবন সম্পর্কে তোমাদের কোন চেতনা থাকে না।” (২:১৫৪) তারা আল্লাহ  থেকে রিজিকপ্রাপ্ত। আল্লাহ বলেন- “যারা আল্লাহর ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে তারাই তাদের রবের কাছে ‘সিদ্দীক’ ও ‘শহীদ’ বলে গণ্য। তাদের জন্য তাদের পুরস্কার ও ‘নূর’ রয়েছে। আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার আয়াতকে অস্বীকার করেছে তারাই দোযখের বাসিন্দা।” (৫৭:১৯)

হযরত রাশেদ বিন সা’দ জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণনা করেছেন। কোনো এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল (সা.)! কবরে সকল মুমিনের পরীক্ষা হবে, কিন্তু শহীদের হবে না, এর কারণ কী? হুজুর (সা.) জবাবে বললেন, “তার মাথার ওপর তলোয়ার চমকানোই তার পরীক্ষার জন্য যথেষ্ট।”

শহীদ মীর কাসেম আলী দেশবাসীর হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন তাঁর কর্মের মাধ্যমে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রেখেছেন বলিষ্ঠ ভূমিকা। তিনি ছিলেন দূর্নীতিমুক্ত ও ইনাসফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের সংগ্রামে অগ্রসেনানী। একটি সুখী-সমৃদ্ধশালী, কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর সততা, দক্ষতা দেশপ্রেমের ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করবে।

ব্যাক্তিকে হত্যা করে তাঁর স্বপ্নকে স্তব্ধ করা যাবে না। ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে এদেশের ছাত্রজনতার হৃদয়ের জাগরুক থাকবেন। তাঁর রেখে যাওয়া স্বপ্ন লালনকারী ছাত্র-যুবকের সংখ্যা এখন লক্ষ-কোটি। যা দেশের সীমানা অতিক্রম করে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়। সুতরাং মীর কাসেমের রক্ত থেকে লক্ষ-কোটি কাসেম শপথ নিয়ে তাঁর আদর্শ কায়েমের জন্য আজ বদ্ধপরিকর। শহীদ মীর কাসেম আলী ৬৩ বছর বয়সে তাঁর মেধা, যোগ্যতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে সম্রাট মোহাম্মদ বিন কাসেমের যোগ্য উত্তরসূরীর সাক্ষর রেখেছেন। এ জাতি এই সাহসী বীরের অবদানকে স্মরণ রাখবে শতাব্দী থেকে শতাব্দীকাল।

পিতার আইনজীবি হিসেবে ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাসেম আদালতে চালিয়েছেন আইনী লড়াই। পিতার সাথে শেষ দেখাতো দুরের কথা এখনো হদিস মেলেনি তার। রাজধানীর মিরপুরের ডিওএইচএস এর বাসা হতে সাদা পোশাক পরিহিত আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে গ্রেফতার করেছে। ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাসেমের মুক্তি দাবি করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিও। জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থা তাদের উদ্বেগ অব্যাহত রেখেছে। কি অদ্ভুত আর বিষ্ময়কর আমাদের রাজনীতি! কত নিষ্ঠুর, নোংরা, কুলষিত, ক্ষমতার মোহে দিকভ্রান্ত আওয়ামীলীগের এই নেতিবাচক শিষ্টাচার বহির্ভূত অপরাজনীতি! ধিক আজকের সমাজের এই ঘৃনিত জিঘাংসাকে। ধিক্ আওয়ামীলীগের এই অমানবিক, ফ্যাসিস্ট চরিত্রকে। পিতার শাহাদাতের পূর্বে শেষ সাক্ষাতের সুযোগটি দিলনা আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু একদিন হয়ত পিতা-পুত্রের জান্নাতে সাক্ষাত হবে ইনশাআল্লাহ্‌।

তিবরানীতে হযরত মুয়াজ বনি জারুন (রা.) থেক বর্ণিত একটি হাদীস যাতে বলা হয়েছে যে, ইসলামের রাজনৈতিক অবস্থা যখন বিকৃত হয়ে যাবে, তখন বিপদগামি শাসকরা কর্তৃত্বশীল হবে এবং তারা সমাজকে ভ্রান্ত পথের দিকে নিয়ে যাবে। তাদের নির্দেশ মেনে চললে জনগণ গোমরাহ হয়ে যাবে। আর তাদের নির্দেশ অমান্য করলে তারা তাদের হত্যা করবে। এ কথা শোনার পর লোকেরা জিজ্ঞেস করলো তারপর তারা কি করবে, তিনি বললেন : সে সময়ে তোমাদেরকে হযরত ঈসার সহচরগণ যা করছিল তাই করতে হবে। তাদেরকে করাত দিয়ে চিরে ফেলা হয়েছে। শূলে চড়ানো হয়েছে, তবুও তারা বাতিলের কাছে আত্মসর্মপণ করেননি”।  হে! আরশের মালিক, শহীদ মীর কাসেম আলী সহ সকল শহীদদের শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করুণ। হে! আল্লাহ আমাদের অশ্রুসিদ্ধ ফরিয়াদ কবুল করুণ,আমীন।

Next Post
মসজিদের নগরী ঢাকা এখন ক্যাসিনো শহর! – ড. মুহম্মদ রেজাউল করিম

মসজিদের নগরী ঢাকা এখন ক্যাসিনো শহর! - ড. মুহম্মদ রেজাউল করিম

সাম্প্রতিক পোস্ট

  • Angeschlossen Spielsaal schnelle Auszahlung Gewinne fix lohnenswert
  • Výherní automat Crazy Spirit od Playtech – komentář. Užijte mostbet recenze kasina si 100% bezplatnou zkušební verzi.
  • Kasino Bonus bloß Einzahlung 143 Erreichbar Casinos
  • Better 6 Sites to play Poker On line the real deal Money in 2025
  • Gewinner Bonusvergleich 2025
  • Анализирайте управлението на jogo Wolf Silver RTP, dicas elizabeth bombastic казино залагане bônus
  • Spielsaal Provision exklusive Einzahlung 2025 Für nüsse Echtgeld Boni
  • Best On-line poker Websites for us Professionals 2025 Update
  • Verbunden Spielbank Spiele exklusive Registration 2025 Sofort aufführen
  • Better Totally free Poker Sites & Software Gamble Free online Poker
https://www.youtube.com/watch?v=KJBC8VQb4LA
  • গুরুত্বপূর্ণ লিংক
  • কেন্দ্রীয় সংগঠন
  • সাইট ম্যাপ
  • যোগাযোগ
যোগাযোগ করুন
৫০৫, এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার
ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৩৩১৫৮১
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৮৩২১২১২
ইমেইল: drkarim31@gmail.com

© ২০২২ ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম কতৃক সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • জীবন বৃত্তান্ত
  • লেখালেখি
    • দারসুল কুরআন
    • দারসুল হাদিস
    • ইসলামী আন্দোলন
    • বাংলাদেশ
    • সংগঠন ও রাজনীতি
    • ধর্ম
    • ইতিহাস
    • প্রবন্ধ
    • অর্থনীতি
    • বিবিধ
  • তথ্যকোষ
    • বই
    • বক্তব্য
    • ছবি গ্যালারী
    • ভিডিও গ্যালারী
  • সংবাদ/কার্যক্রম
    • দাওয়াহ কার্যক্রম
    • শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ
    • তথ্য ও গবেষণা
    • বিবৃতি/বাণী
    • সংগঠন ও রাজনীতি
    • আইন ও মানবাধিকার
    • আন্তর্জাতিক
    • পরিবেশ ও কৃষি উন্নয়ন
    • বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি
    • যুব ও ক্রীড়া
    • শ্রমিক কল্যাণ
    • সমাজ কল্যাণ
    • সাহিত্য ও সংস্কৃতি
    • স্বাস্থ্যসেবা
  • যোগাযোগ

© ২০২২ ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম কতৃক সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত