যার যতটুকু সামর্থ আছে তা নিয়ে সকল পেশা ও শ্রেণির মানুষকে বন্যাদূর্গত মানুষের দুর্দশা লাঘবে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি গত গত ২ দিন ল²ীপুরের বন্যা কবলিত চন্দ্রগঞ্জ, মান্দারী, বাংগা খাঁ, উত্তর জয়পুর, হাজির পাড়া, লাহারকান্দি, ভবানীগঞ্জ, তেরয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন ও ল²ীপুরে পৌরসভার, ১,২,৩, ওয়ার্ডে পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণকালে এসব কথা বলেন। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন জেলা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা নাসির উদ্দীন, শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য প্রফেসর আব্দুর রহমান, শহর আমীর এড, আবুল ফারাহ্ নিশান, চন্দ্রগঞ্জ থানা আমীর মোস্তফা মোল্লা, শহর সেক্রেটারি মাও জহিরুল ইসলাম, ল²ীপুর বারের সাবেক সভাপতি এডভোকেট সাহাদাত হোসাইন চন্দ্রগঞ্জ থানা নায়েবে আমীর নূর মোহাম্মদ রাসেল, সেক্রেটারি এডভোকেট রেজাউল ইসলাম খাঁন, শহর শাখার সহকারি সেক্রেটারি উপাধ্যক্ষ হারুনুর রশীদ এডভোটেক মঞ্জুরুল আলম ও ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান, পৌর কাউন্সিলর ও ইউ মেম্বার বৃন্দ।
রেজাউল করিম বলেন, চলমান এই বন্যা পরিস্থিতি মোটেই স্বাভাবিক নয় বরং প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় জনগণকে শাস্তি দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি করেছে। বাংলাদেশে উজানে ভারতে অভ্যন্তরে নির্মিত সকল বাধ খুলে দেওয়ার কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চল ভয়াবহভাবে প্লবিত হয়েছে। ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ৫০ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। জানমালেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বানের পানিতে ভেসে গেছে হাজার হাজার গবাদী পশু। কিন্তু এ বিষয়ে বৃহত প্রতিবেশীর কোন উদ্বেগ নেই বরং ভারতের রাষ্ট্রদূত বাবু প্রণয় ভার্মা প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করে বলেছেন, ভারত বাধ খুলে দেয়নি বরং তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে গেছে। যা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বরং অসত্যও। তিনি ভারতকে তাদের হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থেকে বাংলাদেশ সহ সকল প্রতিবেশির সাথে প্রতিবেশীসূলভ আচরণ করার আহবান জানান।
তিনি বলেন, জামায়াত একটি গণমুখী, কল্যাণকামী ও আদর্শবাদী রাজনৈতিক সংগঠন। আর্তমানবতার কল্যাণই জামায়াতের রাজনীতির মূলমন্ত্র ও দর্শন। হাদিসে রাসূল (সা.)-এ বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার বিপদসমূহ দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ ঢেকে রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকে রাখবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ২৪৪২) অনত্র বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমকে দুনিয়ার বিপদসমূহের মধ্যকার কোনো বিপদ থেকে রক্ষা করবে, এর প্রতিদানে মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিনের বিপদসমূহের কোনো বিপদ থেকে তাকে রক্ষা করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো গরিব লোকের সঙ্গে (পাওনা আদায়ে) নম্র ব্যবহার করবে, আল্লাহ তার সঙ্গে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানে নম্র ব্যবহার করবেন।…. বান্দা যতক্ষণ তার ভাইয়ের সাহায্য করে, আল্লাহও ততক্ষণ তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৪৬) অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ তার ওপর দয়া করেন না, যে মানুষের ওপর দয়া করে না।’ (বুখারি, হাদিস : ২৪৮৬) তাই বন্যাদূর্গতদের কল্যাণে দলমত নির্বিশেষে সকলকে এযোগে কাজ করতে হবে। তিনি আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ধৈর্য ও সাহসিকতার সাথে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকলের প্রতি আহবান জানান।