সাপ্তাহিক সোনার বাংলার সহকারি সম্পাদক ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সওগাত নিয়ে আবারও আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে মহিমান্বিত পবিত্র মাহে রমজান। আমরা যাতে তাওকয়া অর্জন করে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করত পারি সেজন্যই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের ওপর সিয়াম পালনকে ফরজ বা অত্যাবশ্যক করে দিয়েছেন। পবিত্র কালামে হাকীমে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম পালনকে অত্যাবশ্যকীয় করে দেয়া হয়েছে, যেমন দেয়া হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীগণের ওপর। যেন তোমরা তাকওয়া তথা খোদাভীতি অর্জন করতে পার’। তাই আমাদেরকে রমজান মাসের হক যথাযথভাবে আদায় করে তাকওয়া অর্জনে মনোনিবেশ করতে হবে। তিনি মাহে রমজানের প্রকৃত শিক্ষা বাস্তবজীবনে প্রতিফলন ঘটাতে সকলের প্রতি আহবান জানান।
গতকাল বুধবার রাজধানীর ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবন মিলনায়তনে ‘সেন্টার ফর প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট’ আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এডভোকেট শরীফ উদ্দীন খন্দকারের সভাপতিতে ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আইনজীবী বিভাগের সভাপতি এডভোকেট মইন উদ্দীন। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তর সেক্রেটারি এডভোকেট রোকন রেজা, ঢাকা বারের সাবেক সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুস সালাম রেজা, এডভোকেট রেজাউল ইসলাম, এডভোকেট বেলায়েত হোসেন সুজা, এডভোকেট ইমরুল কায়েস রানা, এডভোকেট গোলাম কিবরিয়া, এডভোকেট আব্দুল হাই, ব্যারিষ্টার তরিকুল ইসলাম ও এডভোকেট শাহীন আক্তার প্রমূখ।
ড. এম আর করিম বলেন, রাসূল (সা) বলেছেন, ‘রমজান মাসের প্রথম অংশ রয়েছে রহমত, মধ্যবর্তী অংশ মাগফিরাত ও শেষ অংশ নাজাত।’ এ মাসের শেষ দশ দিনের মধ্যে রয়েছে পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর। এটি একটি বরকতময় রাত যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ মাসে একটি ফরজ ইবাদাত অন্য মাসের ৭০টি ফরজ, আর ১টি নফল ইবাদাত অন্যমাসের ১টি ফরজের সমতুল্য। এ মাস সবর ও পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীলতার মাস। বস্তুত, পবিত্র মাহে রমজান কুরআন নাজিলের মাস। কুরআন মানবজাতির প্রতি আল্লাহ তায়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত। পবিত্র কুরআন অধ্যয়নের মাধ্যমে কুরআনকে সঠিকভাবে জানা এবং সেই অনুযায়ী নিজের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মাধ্যমেই সত্যিকার অর্থে পবিত্র রমজানের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা সম্ভব। কুরআন থেকে হেদায়াত লাভের জন্য যে মন-মানসিকতা ও চরিত্রের প্রয়োজন, সেই মন ও চরিত্র গঠনের উদ্দেশ্যেই আল্লাহ তায়ালা মাহে রমজানের সিয়াম পালনকে আমাদের প্রতি ফরজ করেছেন। তিনি এ মাসের কল্যাণ ও বরকতকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর জন্য উপস্থিত আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও নগ্নতা বন্ধ করার দায়িত্ব মূলত সরকারের। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাহে রমজান উপলক্ষ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমলেও আমাদের দেশে এখন দ্রব্যমূল্য লাগামহীন। এ মোবারক মাসেও অশ্লীলতা, বেহানাপনা, নগ্নতা ও পাপাচার চলছে সমান তালে। কিন্তু সরকার এসব বিষয় নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। উপরন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য জনগণের ক্রয় সীমার মধ্যে নিয়ে আসা এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি সাধন করে মানুষের জান-মাল-ইজ্জতের নিরাপত্তা বিধানের বিষয়েও সরকার এবং সংশ্লিষ্টরা বেখেয়াল।
তিনি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও পবিত্র রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষায় সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।