আওয়ামী লীগের একজন প্রথম সারির নেতা ও সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের মহাভারত অধ্যয়নের ছবি নিজের ফেইসবুকে আপলোড দিয়ে কি বুঝাতে চেয়েছেন, তা আমাদের মত সাধারণ জনগনের বোধগম্য নয়। ইসলামে যেকোন জ্ঞান অর্জনে বাঁধা নেই। জানার জন্য অবশ্যই পড়তে হবে পড়া যায়। আমি নিজেও মহাভারত, বাইবেল, রামায়ন, বেদ পড়ার চেষ্টা করি। আমার ব্যাক্তিগত কালেকশনে সবগুলো বই-ই আছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, শুধু মহাভারতের ছবি কেন? একটি মুসলিম রাষ্ট্রের একজন মুসলিম মন্ত্রী হিসেবে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন পড়ার ছবিও তো তিনি আপলোড দিতে পারতেন। এটাই ছিল যুক্তিসংঘত। তা না করে মন্ত্রী মহাভারত অধ্যয়নের ছবি আপলোড করে এদেশে ইসলাম প্রিয় জনগনকে কি ম্যাসেজ দিতে চান? নিশ্চয়ই এদেশের জনগনের তা জানার অধিকার রয়েছে। দেশের একজন ক্ষুদ্র নাগরিক হিসেবে এ প্রশ্নের উত্তর আমরা প্রত্যাশা করি।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র, আভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের নানাবিদ ভূমিকা যখন প্রশ্নবিদ্ধ, তখন সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী মহাভারত অধ্যয়নের ছবি আপলোড করে এদেশে ইসলাম প্রিয় জনগনকে দারুণভাবে মর্মাহত করেছে! মুসলমানদের মানসপটে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের পাশাপশি মহা-ভারত স্থান করিয়ে দিতে চান? নাকি ভারত সরকারকে খুশি করতে মন্ত্রী এমন কাজ করলেন! না, নিজেদেরকে ধর্মনিরপেক্ষ কিংবা অ-সাম্প্রদায়িক প্রমাণ করতে মহাভারত প্রীতির এমন প্রকাশ্য মহড়া দিলেন মন্ত্রী!
ভারতের কোন হিন্দু মন্ত্রী যদি কুরআন পড়ার ছবি নিজের ফেইসবুকে আপলোড করতো, তাহলে কি স্ব-পদে টিকে থাকতে পারতেন? কেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো সেখানে! মিডিয়ায় এ নিয়ে কি তোলপাড় হয়ে যেতনা? এটাই হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে অসহিষ্ণুতা আর সাম্প্রদায়িকতা। কিন্তু বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির দেশ। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্রের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী মহা-ভারত অধ্যয়নের ছবি কি সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি ও উদারতার সাক্ষ্য বহন করেনা?
মন্ত্রী সত্যিই কি জ্ঞান আহরণের বাসনা নিয়ে মহাভারত পড়ছেন? নাকি মহাভারত পড়ার ক্ষণিকের ছবি তুলেছেন! অথচ পৃথিবীতে আল-কুরআন ছাড়া কোন ধর্ম গ্রন্থেই অবিকৃত থেকে তাঁর আবেদন রক্ষা করতে পারেনি। এজন্য অবিকৃত, নির্ভূল ও হেদায়াতের গ্রন্থ কুরআন পড়ে পশ্চিমারা আজ সবচেয়ে বেশী ইসলামের ছায়াতলে শামিল হচ্ছে। পৃথিবীর সবচেয়ে পঠিত গ্রন্থ আল-কুরআন-এর বিস্ময়কর মৌজিযা নিয়ে অগ্রসরমান। দশ বছর ব্যাপী গবেষণার পর বিখ্যাত ফরাসী চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডঃ মরিস বুকাইলী তুলে ধরেন:
”Our knowledge of these disciplines is such, that it is impossible to explain how a text produced at the time of the Quran could have contained ideas that have only been discovered in modern times.”
অর্থাৎ- এই বিষয়গুলিতে আমাদের জ্ঞান এমন যে এগুলি আবিষ্কৃত হয়েছে কেবল আধুনিক কালে। অথচ কুরআনের সময়কালের কোন পাঠ্যে কিভাবে এটা আলোচিত হল- তা ব্যাখ্যা করা অসম্ভব।’
তাছাড়া ডঃ মরিস বুকাইলি তাঁর বেস্ট সেলার The Bible, the Quran and Science গ্রন্থে বলেন ঃ
”The Quran does not contain a single statement that is assailable from a modern scientific point of vies.”
অর্থাৎ- কুরআনে এমন একটি বক্তব্যও নেই যা আধুনিক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে আক্রমণযোগ্য হতে পারে।”
তবে ইতিহাসের অমোঘ সত্য কথা হলো-বাংলার মানুষ পবিত্র আল-কুরআনকে নিজেদের জীবনের সবচেয়ে প্রিয় গ্রন্থ হিসেবেই মনে করে। ইসলামকে এদেশের জনগণ হৃদয় দিয়েই ভালোবাসে। এটি উপড়ে ফেলার সাধ্য কার!!