আবহমান কাল থেকে ঈদ ছোট-বড়, ধনী-গরীব সকল মানুষের মাঝে আনন্দের মহান বারতা নিয়ে হাজির হয় প্রত্যেক বছর। কিন্তু এবারের ঈদে বাংলার আকাশ, সন্তান হারা মায়ের আহাজারি, স্বামী হারা স্ত্রীর আর্তনাত, ভাই হারা বোনের মর্মস্পর্শী মায়াকান্না ভারী করে তুলেছে। আপনজনের বিয়োগের বেদনা নাড়াদিচ্ছে!! হৃদয়ের অজানা কোন স্থানে প্রচন্ড একটি আঘাত এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছে। তাদের ঘরে নেই কোন আনন্দ। পৃথিবীর প্রান্তে-প্রান্তে মুসলমানদের উপর নানা অজুহাতে চলছে অমানবিক জুলুম নির্যাতন।
খুন আর গুমের কারনে হারিয়ে যাওয়া অসংখ্য মায়ের সন্তানের অনুপস্থিতি তাদের পরিবারে ঈদের আনন্দ এনে দিতে পারনি। সে সংখ্যা এখন অনেকের-ই অজানা।
কিন্তু হারানোর ব্যাথা কেউ বুঝতে পারে! এই বেদনাতো সে পায় শুধু যে আপজন হারিয়েছে। ইসলামী আন্দোলনের শহীদের মিছিলের সারি দিন-দিন বিস্তৃত হচ্ছে। সর্বশেষ এ মিছিলে শামিল হয়েছেন আমাদের প্রিয় নেতা শহীদ মীর কাসেম আলী।
চিরদিনের জন্য যাদের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ঘাতকের বুলেট, কিংবা সরকার দলীয় গুন্ডাদের হিংস্র থাবা। কে গুজবে এই বাবা-মা ,ভাই-বোন আর প্রিয় সন্তানের চোখের পানি! অনেক দুঃখিনী মা আছেন যাদের দ্বিতীয়বার মা বলে ডাকার এই পৃথিবীতে অবশিষ্ট কেউ নেই!! ঈদে তাদের ঘরে ছিলনা ঈদের আনন্দ! সরকার প্রধান হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আছে কি এর কোন জবাব?
আওয়ামী-জালিম শাহীর বুলেটের আঘাত আমাদের অনেক ভাই-বোনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এই ঈদে আমরা অনেকেই আমাদের মায়েদের সাথে ঈদ করছি। আবার অনেকে মোবাইলে হলেও বাবা-মাকে সালাম জানিয়েছি। কিন্তু যারা আমাদের থেকে চির বিদায় নিয়েছেন তারা……………..!!!
এই জন্য আমাদেরকে শহীদ শরীফুজ্জামান নোমানীর মা বলেছিল, “বাবা তোমরা সকলে ঈদে তোমাদের আব্বা আম্মাকে সালাম করো। বাবা, আমার নোমানীতো নেই। সে আর কোনদিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসবেনা। কিন্তু আমাদের মাঝে মধ্যে এসে তোমরা, মা বলে সালাম দিয়ে যেও”। এই আকুতির জবার আছে কার কাছে!!
যুগে-যুগে ইসলামী আন্দোলনের উপর অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন হয়েছে নানা ভাবে, নানা কৌশলে। বার বার থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে ইসলাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে। কিন্তু কোন দলন নিপীড়নই ইসলামী আন্দোলনের পথচলা থামিয়ে দিতে পারেনি, এখনও পারবেনা ইনশাল্লাহ।
শহীদের মায়েরা এ আন্দোলনের লক্ষ-লক্ষ কর্মীর মাঝে খুজেঁ পান তাদের সন্তানকে। এ রকম অনেক শহীদের পরিবারের আজ আমরা খোঁজ রাখতে পারছিনা। তাই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি সকল শহীদের পরিবারের কাছে। আমরা বিশ্বাস করি সকল ত্যাগের বিনিময়ে এই জমিনে আল্লাহর দ্বীনের পতাকা উড়াবেই, ইনশাল্লাহ।